1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান
উদ্ভাবননরওয়ে

সমুদ্রের উপর মাছের চোখের আকারের রেস্তোরাঁ

১৮ মার্চ ২০২৪

নরওয়ের উপকূলে খাড়া টিলার মাঝে ঢেউ আছড়ে পড়ার দৃশ্য মানুষকে মুগ্ধ করে৷ সেই ফিয়র্ডের কোলেই অভিনব স্থাপনা ও ভাসমান রেস্তোরাঁ সৃষ্টি করে টেকসই রন্ধন প্রণালী আকর্ষণীয় করে তোলার উদ্যোগ শুরু হয়েছে৷

https://p.dw.com/p/4dpZZ
Euromaxx Still / Salmon Eye Restaurant
ছবি: DW

নরওয়ের ফিয়র্ড অঞ্চলে অদ্ভুত এই ধাতুর গোলকের অর্থ কী? স্থাপত্য ও খাদ্যের অনুরাগীরা কিসের টানে সেখানে হাজির হচ্ছেন? ভাসমান এই আর্ট ইনস্টলেশনের নাম ‘স্যামন আই', যার মধ্যে একটা রেস্তোরাঁও রয়েছে৷

মাছ প্রজননের পারিবারিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সোন্দ্রে আইডের মাথায় সেই আইডিয়া এসেছিল৷ কিন্তু সেই নির্মাণের মাধ্যমে তিনি ঠিক কী করতে চান? ‘আইডে ফিয়র্ডব্রুক'-এর কর্ণধার সেই প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘‘স্যামন আইয়ের লক্ষ্য মানুষকে প্রেরণা জোগানো৷ তারা যেন আরো টেকসইভাবে সি-ফুড বা সামুদ্রিক মাছ কাজে লাগায়৷ সমুদ্রের টেকসই উন্নয়নের চিহ্ন হিসেবে সেটিকে বর্ণনা করা হচ্ছে৷''

পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হারডাঙা ফিয়র্ডের কাছেই প্রথাবিরোধী সেই স্থাপনার দেখা পাওয়া যায়৷ সোন্দ্রে জানালেন, যে সেটি আসলে ফিয়র্ডের মাঝে ভাসছে, প্রায় ১,০০০ মিটার গভীরে সেটির নোঙর ফেলা রয়েছে৷''

ডেনমার্কের কভোরনিং ডিজাইন কোম্পানি মাছের চোখের আকারের সেই স্খাপনা ডিজাইন করেছে৷ পাঁচ মিটার উঁচু ঢেউয়ের ধাক্কাও সামলানোর ক্ষমতা সেটির রয়েছে৷

৯,০০০-এরও বেশি ইস্পাতের প্লেট দেখতে মাছের আঁশের মতো৷ স্যামন মাছের চোখের সঙ্গে মিল আসলে এমন এক আইডিয়ার অংশ, যা মাছ ধরার কাজকে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখতে উদ্বুদ্ধ করে৷ ভেতরের অংশেও সেটির গোল আকৃতি টের পাওয়া যায়৷ সোন্দ্রে আইডে বলেন, ‘‘ভেতরের অংশ তুলে ধরা আমাদের কাছে খুব জরুরি৷ এমন বক্ররেখা এবং এমন বৈশিষ্ট্যের ভবন থাকলে ভেতরের অংশেও সব গুণাগুণ আনা আমাদের জন্য জরুরি ছিল৷ গোটা ভবনে প্রায় কোনো সরল রেখা নেই৷''

পানির স্তরের তিন মিটার নীচে প্রদর্শনীর জায়গা রয়েছে৷ গোটা বিশ্বের খাদ্য শিল্পখাত কীভাবে আরো টেকসই হতে পারে, সেটাই সেখানকার মূল বিষয়৷ তাছাড়া অ্যাকোয়াকালচার বা সমুদ্রে চাষই বা কোন ভূমিকা পালন করতে পারে? ‘আইরিস' রেস্তোরাঁর খাদ্য তালিকায়ও সেই ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায়৷ ২০২৩ সালের জুন মাসে সেটি উদ্বোধন করা হয়েছে৷

সেখানকার খাদ্যের কনসেপ্টের নেপথ্যে কে আছেন, সেটা জানতে কাছের স্নিলস্টাফেইটয় দ্বীপে যেতে হবে৷ সেখান থেকেই রেস্তোরাঁর প্রধান রাঁধুনী আনিকা মাডসেন নৌকায় করে প্রতিদিন কাজে যান৷

নরওয়েতে সমুদ্রে ভাসমান অদ্ভুত এক রেস্তোরাঁ

নিজের দেশ ডেনমার্কে নামী রেস্তোরাঁগুলিতে কাজ করার সময়েই তিনি টেকসই রন্ধনপ্রণালীর আইডিয়া থেকে উৎসাহ পেতেন৷ শুধু জলপথে পৌঁছানে সম্ভব, এমন মাছের রেস্তোরাঁ তাঁর কাছে আদর্শ মনে হয়৷ আনিকা মাডসেন মনে করেন, ‘‘কাছের শহরে এমন রেস্তোরাঁ খোলা অবশ্যই অনেক সহজ হতো৷ কিন্তু মনে হয় এই প্রকল্পের সৌন্দর্যের কারণেও আমি না বলতে পারিনি৷ আমাদের কাহিনি তুলে ধরে অতিথিদের খাদ্যের উপকরণের কাছে নিয়ে আসা সত্যি জরুরি৷ এর বিপরীতটা নয়৷ সেই লক্ষ্যে অবশ্যই আমরা অনেক সি-ফুড পরিবেশন করি৷''

সরাসরি সমুদ্র ও আশেপাশের এলাকা থেকেই রেস্তোরাঁয় খাদ্যের উপকরণ আনা হয়৷ সেই সব উপকরণ দিয়ে আনিকা ১৮ পদের মেনু সৃষ্টি করেন৷

টেকসই আইডিয়াকে খাদ্যের রূপ দিতে যে সব পদ সৃষ্টি করা হয়, ‘৫০০ মিটার' তারই অন্যতম৷ মাসেল, ওয়াইল্ড জুনিপার, চিংড়ি ও সিউইড-সহ সেটির সব উপকরণই ৫০০ মিটার ব্যসের মধ্য থেকে সংগ্রহ করা হয়৷

সব মানুষই যাতে তাঁরই মতো স্থানীয় পর্যায়ের সম্পদের কদর করেন, আনিকা সেটাই চান৷

আইশা শরিপজান/এসবি